ফিজির সর্বোচ্চ সম্মান “দ্য কম্প্যানিয়ন অফ দ্য অর্ডার অফ ফিজি”-তে ভূষিত হয়েছেন দেশটিতে সফররত ভারতীয় রাষ্ট্রপতি।
ফিজির সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান “দ্য কম্প্যানিয়ন অফ দ্য অর্ডার অফ ফিজি”-তে ভূষিত হয়েছেন দেশটিতে সফররত ভারতীয় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সে দেশের রাষ্ট্রপতি উইলিয়াম কাতোনিভিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর তাঁকে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এর আগে, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে সুভার স্টেট হাউসে ফিজির রাষ্ট্রপতি উইলিয়াম কাতোনিভিয়ার উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। ভারত-ফিজি সম্পর্ক আরও গভীর করার বিষয়ে দুই দেশের প্রধানরা আলোচনা করেন। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু বলেন, “ফিজিতে এটাই আমার প্রথম সফর। আজ আমি ফিজির রাষ্ট্রপতি এবং ফিজির প্রধানমন্ত্রীর সাথে একটি ইতিবাচক আলোচনা করেছি। আমি ফিজি সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ আমাকে কম্প্যানিয়ন অফ দ্য অর্ডার অফ ফিজি প্রদান করার জন্য। এই সম্মান ভারত ও ফিজির মধ্যে শক্তিশালী ও গভীর সম্পর্কের প্রতীক।”
এছাড়া, ফিজির পার্লামেন্টে ভাষণও দিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। সেখানে তিনি বলেছেন, “ফিজির সঙ্গে আমাদের জনগণের এক অত্যন্ত শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। ফিজির জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং তাঁরা ভারতের ভাষা, রীতিনীতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ করেছে। তাঁদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আমাদের দুই দেশের জনগণের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য ভারত ও ফিজির সম্পর্ককে আরও সুনিশ্চিত করতে হবে।”
দু দেশের সম্পর্কের অর্থনৈতিক বিষয়টিও তুলে ধরেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, “ভারত-ফিজির একটি শক্তিশালী উন্নয়ন অংশীদার হয়েছে। অনেক প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কয়েক বছর আগে ঘোষণা মতো আমরা সুভাতে একটি ১০০-শয্যার তৃতীয় হাসপাতাল তৈরি করব।”
প্রসঙ্গত, ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে গত ০৫ থেকে ১০'ই আগস্ট পর্যন্ত ফিজি, নিউজিল্যান্ড এবং তিমোর লেস্তে সফর করছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এর মধ্যে তিনদিনের ফিজি সফর শেষে আজই দেশটি ত্যাগ করার কথা রয়েছে তাঁর।
এর আগে এক বক্তৃতায় রাষ্ট্রপতি মুর্মুর তিন দেশ সফরের আরও বিশদ বিবরণ দিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের পূর্ব বিষয়ক সচিব জয়দীপ মজুমদার বলেছিলেন, “প্রেসিডেন্ট প্রথমে ফিজি এবং পরে নিউজিল্যান্ড এবং তারপরে তিমুর-লেস্তে যাবেন। ভারতের রাষ্ট্রপতির এই সফরের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। কারণ, এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি ঘোষণা করেছিলেন। এই তিনটি অঞ্চলই আমাদের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির মধ্যে পড়ে। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের একটি খুব পুরানো এবং শক্তিশালী অংশীদারিত্ব রয়েছে, যা আমরা প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।”
শেষ খবর পাওয়া অবধি, ০৭ হতে ০৯ আগস্ট অবধি নিউজিল্যান্ড সফরে যাবেন দ্রৌপদী মুর্মু। দেশটির গভর্নর জেনারেল কিরো এবং প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সনের সাথে বৈঠকের কথা রয়েছে তাঁর। এছাড়া, দেশটিতে অবস্থানকালে সেখানে বসবাসরত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে তাঁর।
পরবর্তীতে পূর্ব তিমুরের রাষ্ট্রপতি হোসে রামোস-হোর্তার আমন্ত্রণে ১০ আগস্ট দেশটিতে যাবেন মুর্মু। সফরকালে দেশটির রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী কে রালা জানানা গুসমাও এবং অন্যান্য বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
কূটনৈতিক মহলে এই তিনটি দেশের সফরই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। কেননা এতে আদতে ভারতের অ্যাক্ট ইস্ট নীতির প্রতিফলন ঘটতে যাচ্ছে বলে মত বিশিষ্টজনদের। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক