জয়শঙ্কর জানান, খুব অল্প সময়ের নোটিসে ভারতে আসার আর্জি জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সংসদে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সে দেশে সংখ্যালঘুদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগপ্রকাশ করেন তিনি। প্রথমে রাজ্যসভা এবং পরে লোকসভায় জয়শঙ্কর জানান, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে নয়াদিল্লি। কূটনৈতিক স্তরেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
মঙ্গলবার সংসদে প্রথমে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন জয়শঙ্কর। জানান, জুলাই মাস থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে উত্তপ্ত রয়েছে সেই দেশ। তার পরই সে দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের কথা তুলে ধরেন বিদেশমন্ত্রী। এই সূত্রেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাকে ‘উদ্বেগজনক’ বলে অভিহিত করেন তিনি।
জয়শঙ্কর বলেন, “আমরা সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। বহু গোষ্ঠী, সংগঠন সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দিকটি নিশ্চিত করছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই বিষয়ে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন থাকব।”
বাংলাদেশে হিংসা এবং লুটপাটের একাধিক ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এই প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন কূটনৈতিক স্তরে নয়াদিল্লি ঢাকার ভারতীয় দূতাবাস এবং সে দেশে অবস্থিত চারটি উপদূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। বাংলাদেশ সীমান্তে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বাংলাদেশে থাকা ভারতীয়দের সঙ্গেও।
জয়শঙ্কর সংসদে এ-ও জানান যে, খুব অল্প সময়ের নোটিসে ভারতে আসার আর্জি জানিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারত সেই অনুমতি দেওয়ার পর সন্ধ্যা ৬টায় গাজ়িয়াবাদের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হাসিনা এবং তাঁর বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে অবতরণ করে একটি বিমান। তবে হাসিনা কিংবা বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, তা খোলসা করেননি জয়শঙ্কর।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় সংসদে সর্বদল বৈঠক ডেকেছিল কেন্দ্র। জানা গিয়েছে, সর্বদল বৈঠকে জয়শঙ্কর জানান, বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। বাংলাদেশে প্রায় ১০ হাজার ভারতীয় ছাত্র-ছাত্রী রয়েছেন। তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়ে কথা বলেছেন জয়শঙ্কর। তার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আপাতত তাঁদের বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে আনা হবে না। তবে ভারত যে কোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকবে। প্রয়োজন হলেই দ্রুত যাতে বাংলাদেশ থেকে ভারতীয়দের সরিয়ে আনা যায়, সেই বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। খবর: ইন্ডিয়া নিউজ নেটওয়ার্ক